Saturday, October 18, 2008

সাবিহা তালা খুলতে না পারায় করুণ পরিনতি

সাবিহা শান্ত শিষ্ট একটি মেয়ে। পড়াশুনায় ভাল। সবাই তার প্রশংসা করে। সে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে। পর্দাও করে। যেনতেন পর্দা নয়। বোরখা পরে ও মুখও ঢাকে। এতগুলো গুণ; সবই পেয়েছে তার Family tradition থেকে। স্কুল কলেজে পড়াশুনার এত চাপ যে সে কোরআন, হাদিস ও ইসলাম সম্পর্কে খুব একটা পড়াশুনা করতে পারেনি। তাতে কি হয়েছে? কোরআন হাদিসের জ্ঞান না থাকলেও সে অনেক ভাল একটা মেয়ে।


সাবিহা এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পর মানুষের মুখে এখানকার ছাত্র, ছাত্রী, শিক্ষক শিক্ষিকা ও পরিবেশ সম্পর্কে ভাল মন্দ অনেক কিছু জানতে পারে। সে নিজেও অনেককিছু অবলোকন করতে থাকে। অনেকে তাকে বলে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছ Broad minded হও। ছেলেমেয়ে সবার সাথে ভাল সম্পর্ক রাখবে এতে পড়াশুনায় অনেক সাহায্য পাবে। Teacher দের সাথে কথা বলবে। আবার তাকে এ কথাও বলা হল যে একজন বিশেষ কাউকে দেখে রেখ তাহলে পড়াশুনায় সাহায্য পাবে আবার মনের অনেক কথা Share করতে পারবে ইত্যাদি আরো অনেক কিছু।


যাইহোক সাবিহা ভাল ছাত্রী হওয়ার সুবাদে খুব শীঘ্রই হলে সীট পেয়ে গেল। হলে থাকার ফলে সে Family tradition এর চেয়ে Hall Tradition এ বেশি ঝুঁকতে থাকল। ভাল কথা। Family tradition এর চেয়ে যদি Hall tradition ভাল হয় তবে Hall tradition এ ঝুঁকতে দোষ কি?


বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর সাবিহাকে যেসব কথা বলা হয়েছিল তার সব কখাই তার ভাল লাগেনি। তবে কিছু কথা তার ভাল লেগেছে। আর তাই সবার সাথে কথা বলতে এবং Class perform করতে সে তার মুখের নেকাব খুলে দিল। এটা একটা ভাল দিক। কিন্তু প্রথম প্রথম নেকাব খুলতে তার খুব খারাপ লাগত। কারণ এতদিন নেকাব দিয়েছে এখন হঠা করে..। যাইহোক কয়েকদিন পর আর তার কিছু মনে হল না।


এবার কিছুদিনপর সাবিহা ভাবল এত গরমে বোরখা পরার কি দরকার বড় হাতাওয়ালা জামা পরলেই তো হয়। সাবিহা বোরখা খুলে বড় জামা পরতে লাগল। এটাও ভাল তবে এটা করতেও তার প্রথম প্রথম খারাপ লেগেছিল। তবে কিছুদিনপর আর তার কিছু মনে হল না।


এবার সাবিহা ভাবল মাথায় কাপড় দেয়ার কি দরকার। কেমন হুজুর হুজুর লাগে তাছাড়া মাথায় কাপড় না দিয়েও তো শালিন থাকা যায়। এটা করতেও তার প্রথম প্রথম খারাপ লেগেছিল তবে আগের মত অত খারাপ লাগেনি। তারপর সাবিহা ভাবল এত লম্বা জামা ভাল লাগে না। সে জামা শর্ট করল অর্থাৎ শর্ট কামিজ। এবার তার খারাপ লাগেনি। বরং যুগের সাথে তাল মিলাতে পেরে সে ভীষণ খুশি।


এবার সাবিহা ভাবল আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী আমি যদি জিন্স আর ভতুয়া না পরি তাহলে কিভাবে Modern হলাম। ইউরোপ আমেরিকার মানুষ কত উন্নত। তাদের কথায় পৃথিবীর মানুষ ওঠে আর বসে। তাদের মত যদি না হতে পারি তাহলে জীবনের সার্থকতা থাকল কোথায়।


সাবিহা তার দৃষ্টিতে Modern হয়েছে। পাশ্চাত্যকে সে অনুসরণ করার চেষ্টা করেছে। পাশ্চাত্যের দেশগুলো কিছু কিছু ক্ষেত্রে উন্নত তা আমরা সবাই মানি। কিন্তু পাশ্চাত্য কি নৈতিকতায় উন্নত? সভ্যতায় (পর্দা) উন্নত? সাবিহা খুব ভাল করেই জানে যে পাশ্চাত্যে জেনা, ব্যাভিচার, ধর্ষণ, হত্যা ইত্যাদি কি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে ((১৯৯১ সালে (১৯৯৩ সালের প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী) আমেরিকাতে ১.৩ জন প্রতি মিনিটে ধর্ষিতা হয়))।কিন্তু তার পরেও সে কেন তাদের অনুসরণ করছে? আসলে তার ইসলাম সম্পর্কে জ্ঞান কম। আল্লাহর হুকুম অমান্য করলে যে তার শাস্তি হবে এই ভয় নেই। ইসলামের পর্দা সম্পর্কে তার জ্ঞান নেই।


আর ইসলাম সম্পর্কে তার জ্ঞান না থাকার কারণে নেকাব খোলা থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধাপে উন্নতি(!)সাধন করে সে আজ Modern হয়েছে এবং Extreme Modern হওয়ার পথে । প্রতিটা ধাপে কিভাবে যে তার বিবেক তালাবদ্ধ হয়ে গেছে তা সে বুঝতেই পারেনি। আল্লাহ নিজেই বলছেন, (এদের অন্তরে আল্লাহ তায়ালা মেরে দিয়েছেন এবং এরা নিজেদের খেয়াল খুশীর অনুসরণ করেসূরা মুহাম্মদ:১৬) । আর এই তালা খুলতে না পারার ফলে আজ তার এত উন্নতি(!) এমনকি সে নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী হওয়া সত্ত্বেও সুন্দরী প্রতিযোগিতায় নামও দিয়েছে। আর এভাবে নিজেকে যে ধীরে ধীরে পন্যে পরিনত করেছে তাও সে বুঝতেই পারেনি।

সে আরও বুঝতে পারেনি ধর্ষণ, জেনা, ব্যাভিচার, না পাওয়ার মানসিক বেদনা, কন্যাদায়গ্রস্ততা ও যৌতুক, এসিড নিক্ষেপ, স্বামী কর্তৃক স্ত্রী হত্যা, নারীদের আত্নহত্যার হিড়িক, বিবাহ বিচ্ছেদ ও নারী অপহরণ ইত্যাদি হওয়ার পিছনে অনেকগুলো কারণের মধ্যে যে নারী পুরুষ উভয়ের বেপর্দাও একটি অন্যতম প্রধান কারণ সেটাও।


নারী পুরুষ উভয়ের বেপর্দার কুফল যে কতটা ভয়াবহ তা আমরা ইংরেজ পন্ডিতদের ভবিষ্যতবাণী থেকেই বুঝতে পারি। তারা নিজেরাই বলেন এক সময় মানুষের পোষাক হবে গাছের ছাল আর লতাপাতা। তারা বর্তমান যুগের পোশাকের ধরণ এবং তা যেভাবে পরিবর্তিত হচ্ছে তা দেখেই এমন ভবিষ্যতবাণী করেছেন। তাহলে সাবিহার টার্গেট কি ভবিষ্যত প্রজন্মকে গাছের ছাল আর লতা পাতা পরায়ে সভ্য(!)করা।


যাইহোক সাবিহার অভিযোগ ছেলেরাতো সব ঢেকে রাখে না, তাহলে মেয়েদের ঢাকতে হবে কেন? তাছাড়া ছেলেরা তাদের দৃষ্টি নত রাখলেই পারে। সাবিহাকে ভাবতে হবে ছেলেদের ও মেয়েদের শারিরীক ও মানসিক ব্যাপারটা এক রকম নয়। যদি একরকমই হত তাহলে কন্যাদায়গ্রস্ততা, পুরুষ কর্তৃক এসিড নিক্ষেপ, স্বামী কর্তৃক স্ত্রী হত্যা, নারীদের আত্নহত্যার হিড়িক, বিবাহ বিচ্ছেদ ও নারী অপহরণ এর পরিবর্তে শুনতাম পুরুষদায়গ্রস্ততা, নারী কর্তৃক এসিড নিক্ষেপ, স্ত্রী কর্তৃক স্বামী হত্যা, পুরুষদের আত্নহত্যার হিড়িক, বিবাহ বিচ্ছেদ ও পুরুষ অপহরণ । তাছাড়া কেউতো চোখ বন্ধ করে থাকতে পারে না। আর একটা মানুষ কতক্ষণ দৃস্টি নত রাখতে পারে যেখানে শয়তান ডান, বাম, সামনে, পিছন সব দিক থেকে প্রভাবিত করে। আসল কথা উভয়কেই পর্দা মানতে হবে ও দৃস্টি নত রাখতে হবে।


সাবিহার আর একটা প্রশ্ন একজন মনের মানুষ (boy friend) খাকলে সমস্যা কি? উত্তরটা কোরআনেই আছে। সূরা বনী ইসরাইলের ৩২ নং আয়াতে বলা হয়েছে- ‌‌‌‍তোমরা জেনার নিকটবর্তী হইও না। নিশ্চয়ই তা একটি বেহায়া পন্থা এবং অসভ্যতার দিকে যাওয়ার মতো একটা খারাপ রাস্তা।


প্রকৃত জেনার পূর্বে আনুষঙ্গিক জেনার শ্রেণীবিভাগ-

১. কামভাবে বিপরীত লিঙ্গের মানুষের দিকে তাকানো চোখের জেনা,

২. কন্ঠস্বর শোনা কানের জেনা,

৩. হাত দিয়ে স্পর্শ করা হাতের জেনা,

৪. কারো দিকে দুই পা অগ্রসর হওয়া পায়ের জেনা,

৫. কারো কথা মনে মনে চিন্তা করা মনের জেনা,

৬. মোবাইলে কথা বলা, মিস কল আর sms দেয়াও মনের জেনা,

৭. Affair করা। কারণ Affair এর ক্ষেত্রে এই বিষয়গুলো আসবেই। বেপর্দা যেমন ধীরে ধীরে সমাজকে খারাপের দিকে নিয়ে যায় তেমন অবিবাহিত জীবণে প্রেম ভালবাসাও সমাজকে খারাপের দিকে নিয়ে যায়।


রাসুলের বানী: আল্লাহ ও পরকালের প্রতি যার ঈমান আছে সে যেন কোন নারীর সাথে এভাবে নিভৃত একাকীত্বে সাক্ষাত না হয় যে তথায় কোন মুহররম পুরুষ বা স্ত্রীলোক নেই। কেননা এরূপ সময়ে এ দুই জনের মধ্য তৃতীয় ব্যক্তি হিসাবে উপস্থিত থাকবে শয়তান আর শয়তানের কারসাজি তো সকলেরই জানা আছে।


তাই প্রকৃত জেনা যাতে না হয় তার জন্য জেনার পূর্ববর্তী অবস্থার প্রতি সতর্ক থাকতে হবে।


সাবিহা যদি ইসলামকে tradition হিসাবে না নিয়ে ইসলাম সম্পর্কে জানত, বুঝত ও ভালবাসত তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পর এভাবে তার পোশাকের পরিবর্তন হত না। সে বড়জোর নেকাবই খুলত তার বেশি কিছু করত না কারণ ইসলাম তা সমর্থন করে না। সে এটাও বুঝত আজ যদি সে মাথায় কাপড় না দেয়া শালীনতা মনে করে তাহলে তার মেয়ে প্যান্ট শার্ট পরাকে শালীনতা মনে করবে। কারণ সাবিহার মা মাথায় কাপড় না দেয়াকে শালীনতা মনে করত না, মাথায় কাপড় দেয়াকেই শালীনতা মনে করত। আর এভাবেই একটি সমাজ ধীরে ধীরে খারাপের দিকে যায়। একদিনেই খারাপ হয় না। তাই সমাজকে খারাপের দিকে নয়, ভালোর দিকে নিতে সাবিহাকে মনের তালা খুলতে হবে। ইসলাম চর্চা করতে হবে। পর্দা মেনে চলতে হবে। তবে পর্দা মানে যে শুধু বোরখাই পরতে হবে এমনটি নয়। অন্যভাবেও পর্দা করা যায়। আসল কথা ইসলাম সম্পর্কে জানা, বুঝা, মানা এবং পর্দা কেন, কিভাবে, এর গুরুত্ব ইত্যাদি সম্পর্কে জানতে হবে এবং খোদাভীতিকে মনের মধ্যে সদা জাগ্রত রাখতে হবে।

Friday, August 8, 2008

আমার ইচ্ছে হয়......

ইস, আমি যদি পাখি হতাম! যদি হতাম সাগরের ঢেউ! হতাম যদি আকাশের তারা! যদি পেতাম আলাদিনের আশ্চর্য প্রদীপ যার মাধ্যমে আমার মনের সব ইচ্ছেগুলি পূরণ করতে পারতাম!

না, এধরনের কোন অবাস্তব ইচ্ছে আমার মনের মধ্যে উঁকি ঝুঁকি দেয় না। একজন মুসলিম মেয়ের যেসব ইচ্ছে থাকার কথা আমি একজন মুসলিম মেয়ে হিসেবে আমারও সেইসব ইচ্ছে আছে । আর তা বাস্তব, কেননা এইসব ইচ্ছেগুলিই একসময় মুসলিম মেয়েরা পূরণ করতে পারত।

আমার ইচ্ছে হয় যখন মিরপুর স্টেডিয়ামে ভারত পাকিস্তান ক্রিকেট ম্যাচ হয় তখন স্টেডিয়ামে গিয়ে খেলা দেখি। আমাদের দেশের যে অবস্থা তাতে সাহস পাই না। কারণ একটা শ্রেণী আছে যারা স্টেডিয়ামে যায় মেয়েদের সাথে ইটিস পিটিস করতে অথবা অন্য কোন ধান্দা নিয়ে ।

অথচ রাসূল (স) এর যুগের মেয়েরা মাঠে গিয়ে খেলা দেখেছেন। হযরত আয়েশা (রা) রাসূল (স) এর সাথে মাঠে গিয়ে বর্ষা ও ঢাল খেলা দেখেছেন । অথচ এই আধুনিক যুগে আমি এত বড়ই এক ভাগ্যবতী মেয়ে যে স্টেডিয়ামে গিয়ে খেলা দেখতে পারি না।

আমার ইচ্ছে হয় সিনেমা হলে গিয়ে বড় পর্দায় সিনেমা দেখি। কিন্তু সেখানকার অবস্থাও একই। তাছাড়া যেসব অশালিন ও বেহায়াপনা সিনেমা দেখান হয় তা আমি একজন মুসলিম মেয়ে (যার বিবেক আছে ভাল মন্দ নির্ধারণ করার) হিসেবে কিভাবে দেখব?

আমার ইচ্ছে হয় দুশ্চিন্তা মুক্ত মনে রাস্তা ঘাটে চলা ফেরা করব। আমার মোবাইল, টাকা পয়সা পকেটমার হওয়ার ভয় থাকবে না। ব্যগের চেনে হাত দিয়ে থাকতে হবে না। পাবলিক বাসে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাসায় ফিরার পথে প্রায়ই ছেলেদের পাশে বসতে হয়। এসময় এ সামান্য রাস্তা যে আমার কাছে ক-তো- দূরত্ব মনে হয়! সব সময়ই দুশ্চিস্তায় থাকতে হয়।

অথচ রাসূল (স) এর জমানায় এমন ছিল যে, তিনি মদিনা থেকে বলেছিলে-আজ এখান থেকে দক্ষিণে হাজরা মাউত পর্যন্ত যদি কোন সুন্দরী যুবতী মেয়ে গা-ভর্তি বহু মূল্যবান জেওর-গয়না নিয়ে একা একা পায়ে হেটে যায় তবু তার দিকে ফিরে তাকানোর মতো কোন বদ লোক এ আরব জাহানে আর নেই।

আমার ইচ্ছে হয় ঈদের দিন যখন ছেলেরা ঈদের নামাজ পড়তে যায় তখন আমিও যাই। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজও মসযিদে গিয়ে পড়তে ইচ্ছে হয়। কিন্ত ইসলাম সম্পর্কে ছেলে মেয়ে সবার পরিপূর্ণ ধারণা না থাকলে একসাথে নামাজ পড়াও বিপজ্জনক।

অথচ রাসূল (স) মেয়েদের ঈদের দিন ঈদগাহে গিয়ে ঈদের নামাজ পড়াড় জন্য অ-নেক তাগাদা দিয়েছেন। সেসময় মেয়েরা পাচ ওয়াক্ত নামাজও মসজিদে গিয়ে পড়তে পারত।

আমার ইচ্ছে হয় আমার ভাবনাগুলো ছেলে মেয়ে সবার সাথে share করব। পরামর্শের ভিত্তিতে কাজ করব। অন্যরাও আমার সাথে share করুক সেটাও চাই। কিন্তু মেয়েদের সাথে ংযধৎব করতে পারলেও ছেলেদের সাথে পারি না। কারণ ছেলেদের সাথে কথা বলতে গেলে তারা অনেকেই মেয়েদের মর্যাদা দিয়ে কথা বলে না। অনেকে তো আবার মনের মানুষই ভেবে বসে।

অথচ রাসূল (স) এর জমানায় আরাফাত দিবসে একদল লোক তাদের সামনে রাসূল (স) এর রোজা রাখার বিষয় নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন মত পোষণ করল।এসময় উম্মুল ফযল (মহিলা) নিশ্চিত করলেন যে তিনি আজ রোজা রাখেননি। এভাবে মেয়েরা ছেলেদের সাথে বিতর্কও করেছেন।
রাসূল (স) এর কাছে ছেলে মেয়ে শিখতে যেত। আয়েশা (রা) সহ রাসূল (স) এর অন্য স্ত্রীদের কাছে পুরুষ সাহাবীরা বিভিন্ন বিষয়ে জানতে ও পরামর্শ করতে গেছেন।

আমার ইচ্ছে হয় আমার যদি কাউকে পছন্দ হয় তাহলে তার সামনে গিয়ে তাকে সরাসরি বিয়ের প্রস্তাব দিই। কিন্তু ভয় হয় যদি কেউ বলে বেহায়া অথবা ভাবে নিশ্চয় প্রেম করত (যদি আমার প্রস্তাবে বিয়ে হয়)! কিন্ত প্রেম আর সরাসরি বিয়ের প্রস্তাব দেয়া তো এক কথা না। প্রেম ইসলামে নিষিদ্ধ (দ্র: সূরা নিসা :২৫)।

অথচ রাসূল (স) জুয়াইরিয়াকে দেখে পছন্দ করে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। এক মহিলা সরাসরি রাসূল (স) কে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিলেন।
আমার ইচ্ছে হয় স্মৃতি রার জন্য আমার বিয়েতে ভিডিও করি। কিন্তু ভিডিওর কথা শুনলে যেভাবে সব সৌন্দর্য্য প্রদর্শন করার জন্য উঠে পড়ে লাগে তাতে আর ইচ্ছে হয় না। অথচ পর্দা রা করেও একটা বিয়ের অনুষ্ঠান অনেক সুন্দরভাবে করা যায়।আর ছেলে মেয়ে উভয়ের পর্দা না করার ফলে কিভাবে একটা সমাজকে ধর্ষণ, জেনা, ব্যাভিচার আকড়ে ধরছে তা আমরা পাশ্চাত্যের দিকে তাকালে সহজেই বুঝতে পারি।আর পাশ্চাত্যের সবকিছুই যখন প্রাচ্যে ছড়িয়ে পড়ছে আর এগুলো ছড়াতে কতন। তার আলামত তো ইতোমধ্যে শুরু হয়েই গেছে।

আমার ইচ্ছে হয় কেউ অন্যায় করলে তার অন্যায়টা ধরিয়ে দিই (আমার জ্ঞানের সাধ্যের মধ্যে)। আমার অন্যায়টাও ধরিয়ে দিক সেটাও চাই। কিন্তু অন্যায় ধরিয়ে দিলে সম্পর্ক খারাপ হয়, মানুষ ভুল বুঝে।

অথচ রাসূল (স) এর যুগে ছেলে মেয়ে একে অপরকে ভাল কাজের আদেশ ও মন্দ কাজের নিষেধ করত। সূরা তওবার ৭১ নং আয়াতে তো সে কথাই বলা হয়েছে। একবার খলিফা ওমর (রা) এক মজলিশে মোহরানা নির্ধারণ করার কথা বললে পিছন থেকে এক মহিলা এর প্রতিবাদ করে বললেন আলাহ ও তার রাসূল (স) যেটা করেননি আপনি তা করতে পারেন না। এটা মেয়েদের অধিকার (একজন ছেলে তার সামর্থ অনুযায়ী যত বেশি ইচ্ছে মোহরানা নির্ধারণ করতে পারে)। তখন ওমর (রা) বললেন, খলিফা ওমর ভুল বলেছেন ওই মহিলা ঠিক বলেছেন। এভাবে একজন সাধারণ মহিলা খলিফার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করলেন এবং তার সিদ্ধান্ত গৃহিত হল। আথচ আমাদের দেশে.................

আমার ইচ্ছে হয় হাসি তামাশা মশকরা আনন্দ-ফুর্তি করব তবে তা হবে শিক্ষণীয় ও বাস্তবসম্মত। যে আনন্দ-ফুর্তি অর্থহীন আলতু-ফালতু তা আমার ভাল লাগে না। তাতে শরীক হতেও ইচ্ছে হয় না। আর তাতে শরীক হতে না পারলে আমি হয়ে যাই unsmart, হয়ে যাই ancient.

অথচ রাসূল (স) বিভিন্ন সময় সাহাবীদের সাথে মশকরা করেছেন। একবার এক বুড়ি রাসূল (স) এর কাছে এসে বেহেস্তে যাওয়ার ব্যাপারে প্রশ্ন করলে তিনি বললেন, কোন বুড়ি তো বেহেস্তে যেতে পারবে না। তখন বুড়ি কাঁদতে কাঁদতে চলে যাচ্ছিল, এবার তিনি বললেন সকল বুড়িই যুবতী হয়ে বেহেস্তে প্রবেশ করবে। তাছাড়া সেসময়ের মেয়েরা বিয়েতে গান গেয়ে ও দব বাজিয়ে আনন্দ-ফুর্তি করত। তবে সবই ছিল সীমার মধ্যে।

একজন মুসলিম মেয়ে হিসেবে আমার ইচ্ছে হয় সকল বিধবা ও অসহায় মেয়ে যাদের পরিবার থেকে ভরণ পোষণ নেয়ার সামর্থ নেই তাদের দায়িত্ব যদি রাষ্ট্র নিত! কেন একটা মেয়েকে পেটের দায়ে বাড়ি বাড়ি কাজ করতে হয়? ঝুকিপূর্ণ কাজ করতে হয়? কেনইবা তাদের ভিাবৃত্তির পথ বেছে নিতে হয় ? কেন ছেলে মেয়েদের কাজের ধরণ ও তাদের দায়িত্ব কর্তব্য পৃথক করা হয় না যেখানে তারা শারিরীক ও মানসিকভাবে এক নয়। ইসলাম তো মেয়েদের ভরণ পোষণের দায়িত্ব নিতে বাধ্য করেনি। তারা কাজ করবে নিজ ইচ্ছে অনুযায়ী। পেশা বেছে নিবে কল্যাণের জন্য। রাসূল (স) এর যুগে এমনটিই হতো।

আমার আরো অ-নেক ইচ্ছে আছে তবে যেটা দিয়ে শেষ করতে চাই তাহলো আমার দেশের মানুষ যদি ইসলাম সম্পর্কে পড়াশুনা করত, ইসলাম সম্পর্কে জানত, বুঝত ও মানত তাহলে আমার সব ইচ্ছেগুলি পূরণ হত। কারণ আরবের মানুষ যখন পুরোপুরি ইসলাম মানত না তখন সে সময়ের মেয়েদেরও আমার মত ইচ্ছেগুলি অপুরণই থাকত। কিন্তু যখন সবাই দলে দলে ইসলাম গ্রহন করল ও পুরোপুরি ইসলাম মেনে চলল তখনই মেয়েরা এই ইচ্ছেগুলি পুরণ করতে পারল।